পরিবেশ সংরক্ষণের পাদপীঠ নতুন ক্যাম্পাস তুলে ধরল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

‘সবুজের আবাহনে আগামীর আহ্বানে’ শীর্ষক মিট অ্যান্ড গ্রিট উইথ মিডিয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন ক্যাম্পাসের উন্মোচন করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পরিবেশবান্ধব নতুন ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়। পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রম, লোকায়ত পারফরম্যান্স এবং আলোচনার মাধ্যমে সামগ্রিক শিক্ষা অভিজ্ঞতাকে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ অঙ্গীকার আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।

এই মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপাসন তামারা হাসান আবেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্য সদস্য, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মাহফুজুল আজিজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারপারসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তামারা হাসান আবেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস নির্মাণের অনুপ্রেরণা এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের শিক্ষাদর্শন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘স্যার ফজলে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চেয়েছিলেন যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে শিক্ষা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে। প্রকৃতি এবং আধুনিক স্থাপত্যের মিশেলে এই নতুন ক্যাম্পাসটি গড়ে তোলা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জীবন সম্পর্কে অন্যভাবে ভাবতে শেখাবে। উন্নয়নের কারণে নগরায়ণ হবেই, কিন্তু প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের উদ্ভাবনী এবং সৃজনশীল হতেই হবে। নগর পরিকল্পনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থী, পরিকল্পনাবিদ এবং সংশ্লিষ্টদের জন্য একটি আদর্শ মানদণ্ড হয়ে থাকবে।’

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাসকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরি হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে যে আমরা মানসম্মত গবেষণা আর উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশের একটি ফ্ল্যাগশিপ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’

মেরুল বাড্ডায় ৭ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাস বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ইনার সিটি ক্যাম্পাস। সুন্দরবন থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া এই ক্যাম্পাস প্রকৃতি এবং স্থাপত্যের মিশেলে নির্মিত হয়েছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এ ভবন নকশা, নির্মাণ, পরিবেশ সচেতনতা বিষয় বিভিন্ন ফিচারে সিঙ্গাপুর, চীন, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের সেরা বিশেষজ্ঞরা কাজ করেছেন।

এ ভবনে ক্রস ভেন্টিলেশন এবং হাইব্রিড থার্মাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ভবনটির সব দিক থেকেই আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে। অ্যারো ডায়নামিক ফিন ভবনের ভেতরে বাতাসের সর্বোচ্চ প্রবাহ নিশ্চিত করবে। ভবনের গায়ে সবুজ চাদরের মতো লেগে থাকা গাছগুলো অক্সিজেন সরবরাহ করবে এবং হাইব্রিড কুলিং সিস্টেম ক্লাসের ভেতরে বিশুদ্ধ বাতাস নিয়ে আসবে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে ক্লাসে বসে থাকলেও তাদের ক্লান্তি আসবে না। এ সবের ফলে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের নির্ভরতা কমে আসবে, যা এই ভবনের ৪০ শতাংশ এনার্জি সাশ্রয় করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *